রৌমারী উপজেলা প্রতিনিধি আকাশ খান
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় মাদকদ্রব্য সেবন ও ব্যবসা প্রতিরোধে স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের উদ্যোগ দিন দিন বেড়ে চলেছে। তারই ধারাবাহিকতায় রৌমারী উপজেলায় মাদক নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করার জন্য একটি সচেতনতামূলক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪ ইং তারিখে, জুমার নামাজের সময় রৌমারী উপজেলার সায়দাবাদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে স্থানীয় জনগণের উদ্দেশ্যে মাদকদ্রব্য বিরোধী প্রচারণা পরিচালিত হয়। এই প্রচারণায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রৌমারী উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জনাব মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী এবং রৌমারী থানা অফিসার ইনচার্জ।
মসজিদে জুমার নামাজ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় মাদকদ্রব্যের ভয়াবহ প্রভাব ও এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। জনাব মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী তার বক্তব্যে মাদকদ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি মাদকের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে দিতে স্থানীয় জনগণকে আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি বলেন, মাদকাসক্তি পরিবার, সমাজ, ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়, যা প্রতিরোধ করা একান্ত প্রয়োজন।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জও তার বক্তব্যে মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি জানান, মাদক প্রতিরোধে স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং মাদক সংক্রান্ত তথ্য প্রদানে জনসাধারণকে উৎসাহিত করেন। তিনি আশ্বাস দেন যে, যে কেউ মাদকব্যবসায়ীদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিবেন, তাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং সুরক্ষা প্রদান করা হবে। এছাড়াও মাদক নিয়ন্ত্রণে থানা পুলিশ সজাগ রয়েছে এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে প্রস্তুত।
এই সভার মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং তারা সক্রিয়ভাবে মাদকের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য প্রস্তুতি নেন। মসজিদের মাধ্যমে মাদকবিরোধী সচেতনতার এই বার্তা সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে পড়বে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষিত রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মাদকবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে উপস্থিত বক্তারা মাদকের সাথে জড়িত ব্যক্তি ও পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে তাদেরকে পুনর্বাসন ও সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার প্রয়াস চালানোর কথাও উল্লেখ করেন।
ইসলামিক মূল্যবোধ ও ধর্মীয় শিক্ষা তরুণ সমাজকে মাদকাসক্তি থেকে দূরে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সায়দাবাদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত এই সভার মাধ্যমে তা পুনরায় প্রমাণিত হয়েছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মাদকবিরোধী প্রচারণা শুধু ধর্মীয় শিক্ষার দিক নয়, বরং সামাজিক আন্দোলন হিসেবে ছড়িয়ে পড়ছে। সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজস্ব জায়গা থেকে যদি মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে, তবে মাদকমুক্ত সমাজ গঠন করা সম্ভব হবে।
উপসংহার:
মাদকদ্রব্যের ভয়াবহতা থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার জন্য রৌমারীর এই উদ্যোগ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা যায়। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়ে পরিচালিত এই প্রচারণা রৌমারীসহ সারা বাংলাদেশে মাদকবিরোধী কার্যক্রমকে শক্তিশালী করবে।
সম্পাদক: ইলিয়াস আমিন, প্রকাশক: এনামুল হক জুনায়েদ
কিশোরগঞ্জ সদর, কিশোরগঞ্জ।
যোগাযোগ: ০১৯০৭-৮৩৬৮০৮, ইমেইল: newsnagar@gmail.com
নিউজ নগর