আকাশ খান (কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি)
কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে এবং জেলার স্বাস্থ্যব্যবস্থা এই চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য শয্যা ও চিকিৎসাসামগ্রীর অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলছে।
ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ও চিকিৎসা পরিস্থিতি
সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রাম জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। সরকারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ রোগী এডিস মশার কামড়ের ফলে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর ভিড়ের কারণে চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি ও নিরবচ্ছিন্ন রক্ত সরবরাহে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে জ্বর, মাথাব্যথা, গাঁটে ব্যথা, চর্মের নিচে রক্তপাতসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এই রোগ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জরুরি ভিত্তিতে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় নতুন কৌশল প্রয়োগ এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সরঞ্জামের ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধি, মশার জন্মস্থল ধ্বংস এবং পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। কিছু এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে লিফলেট বিতরণ ও সচেতনতামূলক সেমিনার আয়োজন করা হচ্ছে।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যক্তিগত স্তরে যা করতে পারেন:
- ঘরের আশেপাশে পানি জমতে না দেওয়া।
- মশারি ব্যবহার করা এবং সন্ধ্যার পর ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখা।
- নিয়মিতভাবে বাড়ি ও আশেপাশে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।
- মশার প্রজনন স্থান নির্মূল করার জন্য সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা
স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন সম্মিলিতভাবে কাজ করছে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে। তবুও জেলার প্রতিটি এলাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের আরও কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জনগণের সচেতনতা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন অপরিহার্য। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্মিলিতভাবে আরও তৎপর হতে হবে।