বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস একদম তাজা, একদম অপরিবর্তিত, একদম সজীব। কিন্তু, ইতিহাসের কোনো অংশ কখনো কখনো ধুলো জমে যায়, ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয় এবং নতুন প্রজন্মের কাছে অস্পষ্ট হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কিছু ঘটনা এবং চরিত্র দীর্ঘদিন ধরে রহস্যময় ছিল, তবে ৫০ বছর পর এক বিশাল ঘটনা ঘটেছে যা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকেই নতুন করে সাজিয়েছে।
এ ঘটনাটি হলো—মেজর ডালিমের লাইভ সাক্ষাৎকার।
প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক মেজর আবদুল হালিম (ডালিম) গত বছর একটি লাইভ সাক্ষাৎকারে এসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন অজানা তথ্য প্রকাশ করেছেন, যা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাঁর এই উপস্থিতি কেবল মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা তুলে ধরেনি, বরং নতুনভাবে নির্ধারণ করেছে কিছু বিতর্কিত ও অপ্রকাশিত ঘটনার প্রকৃত চেহারা। এটি প্রথমবারের মতো সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের চিহ্নিত সাক্ষীদের মধ্যে একটি প্রতিপাদ্য আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
মেজর ডালিমের কথায় উঠে এসেছে এমন কিছু ঘটনা যা আগে কখনো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। তার কাছে রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের এমন সব গল্প, যা তাকে মুক্তিযুদ্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হিসেবে পরিণত করেছে।
তিনি লাইভে এসে জানালেন, ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, যা তৎকালীন সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং সামরিক কৌশলগত বাস্তবতার দিক থেকে অভূতপূর্ব ছিল।
এছাড়া, ডালিম তার সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী কিছু ঘটনা এবং যুদ্ধের সময় যারা জীবিত ছিলেন, তাদের না বলা গল্পগুলো শোনাতে শুরু করেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের বহু গোপন দিক, যুদ্ধের কৌশল এবং পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে কীভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা অজানিত কৌশলে একের পর এক বিজয় অর্জন করেছিলেন, এসব বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেছেন তিনি।
এ ঘটনা কেবল একটি লাইভ সাক্ষাৎকারের সীমানায় সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের আরও গভীরে পৌঁছানোর একটি নতুন পন্থা ছিল। অনেকই জানতেন না যে, মেজর ডালিমের ভূমিকা ছিল যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে। তাঁর বর্ণনা অনুসারে, মুক্তিযুদ্ধের অনেক পরবর্তী ঘটনা যে ভিন্নভাবে ঘটেছিল, তা অনেকের কাছে সত্যিই অজানা ছিল।
এমনকি, তাঁর সাক্ষাৎকারের পরে অনেক পাঠক, গবেষক, এবং ইতিহাসবিদরা আগের সমস্ত তথ্য পুনঃমূল্যায়ন করতে শুরু করেছেন। ডালিমের সাক্ষাৎকারে উঠে আসা তথ্যগুলোর মধ্যে বিশেষত যুদ্ধের পরবর্তী রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, সৈন্যদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংগ্রাম করার নতুন কৌশলগুলি শোনার পর, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুনভাবে পুনর্গঠিত হতে শুরু করেছে।
মেজর ডালিমের লাইভ সাক্ষাৎকারটি প্রথমে সামাজিক মিডিয়ার মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠে। তার একাধিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা তোলার পাশাপাশি, এটি ইতিহাসের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে। অনেকেই এখন মেজর ডালিমের কথাগুলোকে নতুনভাবে যাচাই করতে শুরু করেছেন এবং গবেষণার নতুন দিক খুলেছে মুক্তিযুদ্ধের উপর।
মেজর ডালিমের এই লাইভ সাক্ষাৎকার একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে ইতিহাসে লিখিত থাকবে। এটি কেবল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা তথ্যের উন্মোচন ঘটায়নি, বরং মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট ও সামরিক পরিস্থিতির নতুন দৃষ্টিভঙ্গিও দিয়েছে। এতে করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নতুনভাবে বিশ্লেষণ এবং পুনঃমূল্যায়নের পথ উন্মুক্ত হয়েছে, যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ইতিহাস লেখার পদ্ধতিকে নতুন এক দিশা দেখাবে।
সম্পাদক: ইলিয়াস আমিন, প্রকাশক: এনামুল হক জুনায়েদ
কিশোরগঞ্জ সদর, কিশোরগঞ্জ।
যোগাযোগ: ০১৯০৭-৮৩৬৮০৮, ইমেইল: newsnagar@gmail.com
নিউজ নগর