আজ কিশোরগঞ্জ শহর এক ব্যতিক্রমধর্মী দৃশ্যের সাক্ষী হলো। শহরের প্রধান সড়কজুড়ে, শত শত মানুষের কণ্ঠে ফুঁসে উঠল একটি দাবিই—"ফিলিস্তিন মুক্ত হোক!"
কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর আহ্বানে আয়োজিত এই বিশাল বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, ছাত্র, যুবক, বয়স্ক—সবাই।

মিছিলটি শুরু হয় শহরের কেন্দ্রস্থল বড়বাজার মোড় থেকে। এরপর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে, ট্রাফিক মোড়, গৌরাঙ্গ বাজার হয়ে চৌরাস্তা এসে সমাবেশে রূপ নেয়।

মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা, প্ল্যাকার্ড, ব্যানার। লেখা ছিল—

• "ইসরায়েল এক সন্ত্রাসী রাষ্ট্র"
• "গাজা নয়, এটা এক খোলা কারাগার"
• "শিশুহত্যা বন্ধ করো"
• "আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে"

শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর ছিল পুরো শহর।
👉 "ফিলিস্তিনের রক্ত বৃথা যাবে না!"
👉 "আল-আকসা মুক্ত হোক!"
👉 "ইসরায়েল নিপাত যাক!"
👉 "গাজা তোমার সাথে আছি!"

এই মিছিল ছিল শুধুমাত্র একটি প্রতিবাদ নয়—এ ছিল একটি ঘোষণা, একটি দায়বদ্ধতা, মুসলিম উম্মাহর পক্ষ থেকে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানোর প্রকাশ।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ। তাঁরা বলেন:

🗣️ “আমরা আজ শুধু ফিলিস্তিনের পক্ষ নিতে আসিনি, আমরা এসেছি আমাদের বিবেক জাগিয়ে তুলতে। ইসরায়েলের ৭০ বছরের বেশি সময় ধরে চলা দখলদারিত্ব, বর্বরতা, মানবাধিকার লঙ্ঘন—এসবের বিরুদ্ধে আমরা চুপ থাকতে পারি না।"

তাঁরা আরও বলেন:

🗣️ “যেখানে একটি শিশু খেলতে পারে না, ঘুমোতে পারে না, চোখে-মুখে ভয়—সেখানে শান্তি নেই, মানবতা নেই। ফিলিস্তিন শুধু মুসলমানদের বিষয় নয়, এটি মানবতার পরীক্ষা।"

প্রতিবাদকারীরা বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান—

• জাতিসংঘকে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে।
• মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে শুধু নিন্দা নয়, একতাবদ্ধ হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
• বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকেও কূটনৈতিকভাবে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে।

মিছিল শেষে শহরের চৌরাস্তা মোড়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ দোয়া।
🔸 সেখানে ফিলিস্তিনে শহীদদের রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।
🔸 আহতদের দ্রুত সুস্থতা ও দখলমুক্ত ফিলিস্তিনের জন্য মুনাজাত করা হয়।

সাধারণ জনগণের মাঝে ব্যাপক সাড়া দেখা গেছে এই বিক্ষোভ ঘিরে। অনেকেই নিজেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করেন। অনেকে বলেন—

🧕 “এই হামলাগুলো দেখে আর ঘরে বসে থাকা যায় না।”
🧔 “আমাদের দেশের মানুষ অনেক শান্তিপ্রিয়, কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট হওয়া দরকার।”
👦 “স্কুলে পড়ি, কিন্তু জানি—ফিলিস্তিনের মানুষ আমাদের ভাই। আমরা চুপ থাকবো না।”

বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকেই ফিলিস্তিন পতাকা মাথায় বেঁধে, হাতে পোস্টার নিয়ে পুরোটা সময় উদ্দীপ্তভাবে শ্লোগানে অংশ নেন।

এই প্রতিবাদ কর্মসূচি শুধুই একটি দিনের ঘটনা নয়—এটি যেন হয়ে ওঠে দীর্ঘ সময়ের একটি সচেতনতার যাত্রা, এমনটাই প্রত্যাশা আয়োজকদের।

শেষে আয়োজকরা বলেন:

🗣️ “আমরা চাই না শুধু মিছিল দিয়ে দায়িত্ব শেষ হোক। চাই—শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক আলোচনা হোক, মিডিয়ায় ফিলিস্তিনের সত্য তুলে ধরা হোক, সামাজিকভাবে বর্জন হোক ইসরায়েলি পণ্য। আমাদের চেতনায় ফিলিস্তিন বাঁচুক।”

🎬 শেষ কথা
এই প্রতিবাদ শুধু কিশোরগঞ্জ নয়—বাংলাদেশের প্রতিটি সচেতন মানুষের অন্তরের আওয়াজ।
এই আওয়াজ যেন বিশ্ব বিবেককে নাড়িয়ে দেয়, যেন নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের চোখে একটুখানি আশার আলো ফুটে ওঠে।

🕊️ ফিলিস্তিন থাকবে আমাদের হৃদয়ে... যতক্ষণ না সে স্বাধীন হয়।
📢 ফিলিস্তিনের পক্ষে কণ্ঠ মিলান, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান!