সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া নাটক ‘পার্টি অফিস’ আবারো আলোচনায়, তবে এবার ভিন্ন এক কারণে। নাটকের এক পর্বে চেয়ারম্যান চরিত্রের একটি দৃশ্য—যেখানে তিনি বিশেষ ভঙ্গিমায় হেঁটে আসছেন—তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, এই হাঁটার স্টাইলটি আওয়ামী লীগের এক আলোচিত নেতার হাঁটার অনুকরণ, যা দেখে নেটিজেনদের একাংশ মনে করছেন এটি উদ্দেশ্যমূলক ব্যঙ্গ।
নাটকের দৃশ্য এবং রাজনৈতিক মিল ‘পার্টি অফিস’-এর সেই দৃশ্যটিতে দেখা যায়, চেয়ারম্যান সাহেব সঙ্গীদের সঙ্গে নাটকীয়ভাবে দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করছেন, পেছনে দলবল নিয়ে। তার হাতের ভঙ্গি, চোখের তাকানো এবং হাঁটার স্টাইলটি ইউটিউব, টিকটক ও ফেসবুকে ‘মিম’ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। মজার বিষয় হলো, ওই হাঁটার সঙ্গে একজন জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতার স্টাইল হুবহু মিলে গেছে বলে দাবি করছেন অনেকে।
ফলে অনেকে এটিকে ব্যঙ্গ বা পরোক্ষ সমালোচনা হিসেবেও দেখছেন। নির্মাতাদের অবস্থান এ নিয়ে Family Entertainment HD-এর পক্ষ থেকে কোনো সরাসরি মন্তব্য না এলেও, তাদের অন্যান্য নাটক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়—তারা মূলত সমাজ, রাজনীতি ও বাস্তব ঘটনার প্রেরণা নিয়ে স্যাটায়ারধর্মী কনটেন্ট তৈরি করে।
তবে তারা কখনোই কারো নাম বা পরিচয় উল্লেখ করে সরাসরি ব্যঙ্গ করে না, বরং চরিত্রের মধ্য দিয়ে প্রতীকীভাবে কিছু তুলে ধরেন। নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া একদল দর্শক বিষয়টিকে নিছক মজার কCoinিক হিসেবে দেখছেন এবং বলছেন, “বাস্তব মিল থাকতেই পারে, কিন্তু এটা নাটক।
” অপর দল মনে করছেন, এতে রাজনৈতিক বার্তা আছে এবং এটি একটি সচেতন উপস্থাপন। অনেকে আবার বলছেন, “নেতারা যদি এভাবে হাঁটেন, তাহলে দোষ নাটকের না, বাস্তবতার।” রাজনৈতিক মহলে আলোচনা যদিও কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ আসেনি, তবে স্থানীয় পর্যায়ের কিছু নেতা বা কর্মী সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং নাটকটিকে ‘অনুচিত ব্যঙ্গ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। সংগঠন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্যাটায়ার বা ব্যঙ্গচিত্র গণতন্ত্রের একটি অংশ, এবং তা সীমা অতিক্রম না করলে এটি এক ধরনের ‘soft criticism’।
নাটক বা কন্টেন্ট নির্মাতা যখন কোনো ব্যক্তির নাম বা চেহারা উল্লেখ না করে প্রতীকী উপস্থাপন করেন, তখন সেটিকে সরাসরি আক্রমণ হিসেবে দেখা ঠিক নয়। উপসংহার ‘পার্টি অফিস’ নাটকের হাটা দৃশ্যটি আপাতদৃষ্টিতে একটি নির্দোষ কমেডি হলেও, এটি বাংলাদেশি রাজনীতির বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি হিসেবেই অনেকে দেখছেন। নাটক, কৌতুক, বা ব্যঙ্গচিত্র—সব কিছুই সমাজের আয়না। তবে সেটি যেন সম্মানের সীমা বজায় রেখে হয়, এটাও গুরুত্বপূর্ণ।