জাকির মন্ত্রীর জমিকে ঘিরে রৌমারীর চর শৌলমারীতে বিএনপির দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী দ্বন্দ্ব!
রৌমারী, কুড়িগ্রাম:
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী ইউনিয়নে সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের ক্রয়কৃত জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে চলমান উত্তেজনা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে। গত ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া এই বিরোধে এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র ও জনতার এক গণআন্দোলনের সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এলাকা ছেড়ে গেলে, বিএনপির স্থানীয় আহ্বায়ক আব্দুস ছাত্তার, রাজ্জাক মোল্লা ও তাদের অনুসারীরা সাবেক মন্ত্রী জাকির হোসেনের জায়গা দখলে নেন। পরে তারা নদীভাঙনের শিকার দরিদ্র মানুষদের কাছ থেকে প্রতি প্লট ৫০ হাজার টাকা করে নিয়ে জায়গাগুলো ভাগ করে দেন।
এই অর্থ বণ্টন নিয়ে দ্বন্দ্বে পড়ে স্থানীয় বিএনপি বিভক্ত হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে অপর পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসহ ওই এলাকায় হামলা চালিয়ে বসতঘর ভাঙচুর করে। স্থানীয়রা জানায়, হামলায় নেতৃত্ব দেন জাহাঙ্গীর মোল্লা, রাজ্জাক মোল্লা, তার ছেলে ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শহিদুল মোল্লা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান মোল্লা। তারা নদীভাঙা মানুষদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন এবং চাঁদা না পেয়ে ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেন।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, সোনাপুর গুচ্ছগ্রামে অবস্থিত সাবেক মন্ত্রীর গোডাউনে বসবাসকারী নদীভাঙা পরিবারগুলোর ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে নেতৃত্ব দেয় জাহাঙ্গীর মোল্লার ভাতিজা সুজনের বন্ধু ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী উমর আলীসহ আরও কয়েকজন। এই ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পরে রৌমারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা দাবি করছেন, ঘুঘুমারী এলাকার বিএনপি নেতাদের দখলবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
স্থানীয় এক নাগরিক বলেন, “নদীভাঙা মানুষের শেষ আশ্রয়ও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, অথচ প্রশাসন এখনো দোষীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেয়নি।”
এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।