কুমিল্লা প্রতিনিধি: অনিক হাসান
ফেনীর উত্তরাঞ্চলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ১৫টিরও বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা থেকে নদীবাঁধে ভাঙন শুরু হয়। আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ফুলগাজীর দেড়পাড়া, শ্রীপুর, মুন্সিরহাট, বরইয়া, নিলক্ষীসহ ১০টি গ্রাম সম্পূর্ণরূপে প্লাবিত হয়েছে। ফুলগাজী বাজারেও পানি ঢুকে দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে, ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। পরশুরাম উপজেলার উত্তর ধনীকুন্ডা, মধ্যম ধনীকুন্ডা, রামপুর, দুর্গাপুর ও রতনপুর প্লাবিত হয়েছে। পরশুরামের বল্লামুখা সীমান্তে ভারতের অংশে বাঁধ ভেঙে বাংলাদেশ অংশে পানি ঢুকছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার অনেক উপরে অবস্থান করছে এবং নদীর তীব্র স্রোতের কারণে নতুন নতুন স্থানে ভাঙন দেখা দিচ্ছে।
এদিকে রাতেই শত শত মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠে যান নিরাপদে থাকতে। জেলা প্রশাসক জানান, ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে প্লাবিত এলাকার মানুষজন আশ্রয় নিচ্ছেন।
গত দুই দিনের ভারী বর্ষণে ফেনী শহরের বিভিন্ন এলাকাতেও সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। যদিও পানি ধীরে ধীরে নামছে, কিন্তু নিচু এলাকার ঘরবাড়ি এখনও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে আছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে রাত পার করছেন। শিশুসহ নারী ও বয়স্কদের দুর্ভোগ আরও বেশি।
জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস এবং স্বেচ্ছাসেবক দল উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া না গেলেও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি এবং গবাদিপশু হারিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি সহায়তা, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করার কাজ চলমান রয়েছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, অনেক এলাকায় এখনো ত্রাণ পৌঁছেনি।
সতর্কতা: পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা থাকায় নদীর আশপাশে বসবাসরতদের দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে প্রশাসন।