কিশোরগঞ্জ, বাংলাদেশ – কিশোরগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ আবারও এক অবিশ্বাস্য রেকর্ড গড়েছে। ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে মসজিদের ১১টি দানবাক্স খুলে পাওয়া গেছে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ—৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা। এই পরিমাণ টাকা পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে, যা দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে।
পাগলা মসজিদের ইতিহাস শত বছরের পুরনো। এটি শুধু কিশোরগঞ্জ নয়, গোটা বাংলাদেশেই একটি আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতীক। এই মসজিদে দান করার বিষয়ে মানুষের এক গভীর আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। ধারণা করা হয়, এখানে দান করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়—এ বিশ্বাস থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে দান করে থাকেন।
নিয়মিত গণনা ও স্বচ্ছতা
মসজিদ কর্তৃপক্ষ সাধারণত প্রতি তিন মাসে একবার দানবাক্সগুলো খুলে গণনা করে। গণনার কাজ চলে প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে। টাকা ছাড়াও দানবাক্সে পাওয়া যায় বৈদেশিক মুদ্রা, স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন, এমনকি হাতঘড়িও।
বর্তমানে পাগলা মসজিদের রূপালী ব্যাংকে রাখা মোট দানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭২ হাজার ৫৭৬ টাকা, যা দেশের অন্যান্য মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের তুলনায় ব্যতিক্রমী।
ব্যয়ের খাত
মসজিদের দানে সংগৃহীত অর্থ শুধু মসজিদের সংস্কার ও পরিচালনাতেই ব্যয় হয় না, বরং তা সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি
বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রকল্পে অনুদান
এতিমখানা ও হাসপাতালের সহায়তা
স্থানীয় জনগণের জরুরি চিকিৎসা সহায়তা
আস্থার প্রতীক
পাগলা মসজিদ এখন কেবল একটি ধর্মীয় স্থাপনা নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে মানুষের আস্থার কেন্দ্রবিন্দু। প্রার্থনার পাশাপাশি দান-সাধনার মাধ্যমে এই মসজিদ এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
পাগলা মসজিদ প্রমাণ করেছে—বিশ্বাস, আস্থা এবং নিষ্ঠা থাকলে সাধারণ মানুষের ছোট ছোট অবদানও মিলিত হয়ে বিশাল পরিবর্তনের জন্ম দিতে পারে।